চুনতী হাকীমিয়া মাদ্রাসার দুই শততম বষপূর্তি ও আমার ভিন্ন্মত প্রসঙ্গে কিছু কথাঃ প্রফেসর ডঃ আবু বকর রফীক

30 01 2020

Image may contain: sky and outdoor

 

প্রাসঙ্গিক কথা
চুনতী হাকীমিয়া মাদ্রাসার দুইশততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনের জন্য বর্তমানে খুবই উৎসাহ
উদ্দীপনার সাথে জোর প্রস্তুতি চলছে। বিশেষভাবে নতুন প্রজন্ম যারা বিগত দুই দশকের মধ্যে চুনতী
হাকীমিয়া মাদ্রাসা হতে কোন না কোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং চুনতী হাকীমিয়া মাদ্রাসার প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে সঠিক ধারনার অধিকারী নয় তারাই এ অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষভাবে উৎসাহী বলে মনে হচ্ছে। বলতে গেলে তারা মহাসমারোহে এ দুইশততম বষপূর্তির অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য খুবই আবেগ আপ্লূত। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা দ্রুত অগ্রসরমান, যেন পেছনের দিকে ফিরে দেখার সময় নেই। কারও কোন ভিন্নমত বা যুক্তি শ্রবনের ফুরসৎও নেই। স্বপ্ন একটিই। আজ থেকে দু’শ বছর পূর্বে তথা ১৮১০ সালের কোন এক শুভদিনে যে প্রতিষ্ঠানটির গোড়া পত্তন হয়েছিল সেই স্মৃতিকে ধারণ করার। এবং চুনতীর অতি সম্মানিত এক মুরব্বী ও সাইয়িদ আহমদ শহীদ (রা:) এর খলীফা হযরত মৌলানা আব্দুল হাকীম (রা:) কর্তৃক যে মহৎ কর্মটি সম্পাদিত হয়েছিল তার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। কিন্তু এরা যখন শুনতে পায় যে আমিই চুনতী হাকীমিয়া মাদ্রাসার দুইশত বছর পূর্তি অনুষ্ঠান উদযাপনের এ ধারণার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি তখন অনেকে আশ্চর্যান্বিত হয়, আবার অনেকে আমার এ অনমনীয় মনোভাবকে এক অমার্জনীয় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে, এমনকি বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করতেও কুন্ঠিত বোধ করে না। পক্ষান্তরে কিছু ভাই এমনও রয়েছেন যারা মনে করছেন ড. রফীকের অবস্থান হয়তবা সঠিক। কিন্তু সাধারণের আবেগ (general sentiment) এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে লাভ কি? কাজেই স্রোতের অনুকুলে থাকাই নিরাপদ।
মূলত: এ দুইশততম বার্ষিকী উদযাপন বিষয়ে আমি কেন ভিন্নমত পোষণ করছি? কারও মর্যাদাকে
ক্ষুন্ন করার বা কারও ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে না একটি বাস্তবতাকে সমুন্নত রাখার উদ্দেশ্যে আমার এ অবস্থান তা ব্যাখ্যা করার জন্য এবং আমার পক্ষে অন্য কোন অবস্থান গ্রহণের সুযোগ ছিল কিনা তা বর্ণনা করার জন্যই এ লেখাটির প্রয়াস। আমি একান্তভাবে আশা করব আমার এ লেখাটি কোন রকম পরিবর্তন, পরিবর্দ্ধন বা কর্তন বিয়োজন ছাড়া হুবহু প্রকাশের ব্যবস্থা করা হবে।

 

বিস্তারিত পড়ার জন্যে লেখাটি ডাউনলোড করুন এখানে। 





রামাদান এর প্রস্তুতিঃ ব্যবহারিক দৃষ্টিকোণ

31 05 2016

রামাদান (আমাদের চলাচলিত ভাষায় ‘রমজান’) মাস ইতিমধ্যেই আমাদের দোরগোড়ায় এসে উপনীত হয়েছে। অল্প ক’দিন পরেই এই মহিমান্বীত মাসে আমরা পদার্পন করবো, ইন শা আল্লাহ। এই মাসের গুরুত্ব, তাৎপর্য, ফজীলত, মাহাত্ম্য, কিংবা রোজা সংক্রান্ত নিয়ম কানুন তুলে ধরার জন্যে এই প্রয়াস নয়। এই বিষয়ে আমরা ইতিপূর্বেও অনেক জ্ঞান গর্ভ আলোচনা শুনেছি, কিংবা অনেক বই বা লেখা পড়েছি। আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াসটির মূল উদ্দেশ্যই হলো আসন্ন এই গৌরবান্বিত মাসটাকে যেনো আমরা পরিপূর্ণ মর্যাদায় ও সর্বাত্মক ধর্মানুরাগ নিয়ে সর্বাধিক কার্যকর (maximise) করতে পারি, সে লক্ষ্যে কিছু কর্মপদ্ধিত নিয়ে ব্যবহারিক দৃষ্টিকোণ থেকে সামান্য আলোকপাত করা। এই লেখাটির মূল আলচ্য বিষয়গুলু কেবলমাত্র আমার ব্যক্তিগত চিন্তাধারা থেকেই অর্জিত নয়, বরং বিগত কয়েক সপ্তাহে আমাদের পরিচিতদের সাথে নিয়ে কিছু পারষ্পরিক আলোচনা ও ইন্টারনেট (Productive Muslim website) থেকে পঠিত কয়েকটি লেখা থেকে সংকলিত।

(source: internet)

আমরা যে কেউই আমাদের কারো কাছে মহান কোনো ব্যক্তি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো কিছু আগমনের সম্ভাবনা থাকলে, তার জন্যে সচেতনতার সাথেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকি, এটাই স্বাভাবিক। হোক না তিনি গুরুত্ত্বপূর্ণ  কোনো ব্যক্তি, কিংবা তাৎপর্যপূর্ণ যে কোনো ঘটনা বা অনুষ্ঠান। তার জন্যে ছুটি নেওয়ার প্রয়োজন হলে তাই করি। ঘর-বাড়ি সাজানোর কিংবা কোনো বিশেষ সৌন্দর্য্য বর্ধনের দরকার হলে তাও হয়ে উঠে। ঠিক তেমনই, যে মাসের এতো গুরুত্ব, যে মাসে পবিত্র কুর’আন নাযিল হয়েছে, যে মাসের এক একটি নফল ইবাদাত অন্য মাসের ফরজ ইবাদাত এর সমান, যে মাসে এমন একটি রাত আছে যাতে ইবাদাত করাটা এক হাজার মাস ইবাদাত করার সমতুল্য, যে মাসের প্রতিটা সূর্যাস্তের সময় রোজাদারদের দোয়া কবুল এর সময়, এতো মহান মহিমান্বিত একটি মাসের জন্যে নিশ্চয় আমাদের মানসিক, শারিরিক, ও উপযুক্ত রসদাদি নিয়েই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত, যাতে এর একটি মুহুর্তও আমাদের হেলায় ফেলায় বিনষ্ট হয়ে না যায়। এক হাদীসের বর্ননায় মহানবী (সঃ) হযরত জিব্রাঈল (আঃ) এর যে তিনটি দোয়ার জন্যে “আমীন” বলে জোর গলায় সমর্থন করেছিলেন, তার একটি ছিলো ‘সেই লোকের জন্যে অভিশাপ যে রমাদান মাস পেয়েও তার গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারেনি!’ তাই রামাদান মাসেই আমরা যেনো আমাদের অনাকাঙ্খিত পাপাচার গুলু মোচন করাতে আল্লাহ পাক এর সামনে আরো গ্রহনযোগ্যভাবে নিজেদেরকে সমর্পন করতে পারি, তার জন্যে সঠিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। সাহাবায়ে কেরামগন (রাদিঃ) রামাদানের সময়টাকে পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানোর জন্যে এতই সচেতন ছিলেন যে, রামাদান এর পূর্বের পাঁচটি মাস রামাদান নিয়ে ভাবতেন, এবং রামাদান পরবর্তী ছয়টি মাসই রামাদানে কৃত ইবাদাতগুলো আল্লাহর কাছে গ্রহনযোগ্য হয়েছে কি না, তা নিয়ে বিচলিত থাকতেন। আমাদেরও তাই রামাদানকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করার উদ্দেশ্যে কিছুটা পরিকল্পনা হাতে নেয়া উচিৎ। বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন বলেছিলেনঃ “if you fail to plan, you plan to fail” – আপনি যদি সঠিক পরিকল্পনা নিতে ব্যর্থ হোন, আপনি মূলতঃ ব্যর্থ হওয়ার পরিকল্পনাই করেছেন। আমরা কেই বা ব্যর্থ হতে চাই?

 

রামাদানে পানাহারঃ

রামাদানের দিনগুলুতে পানাহার নিষিদ্ধ বলেই যে রামাদানে পানাহার নিয়ে পরিকল্পনা থাকার প্রয়োজন নেই, এমনটা কিন্তু মোটেও সঠিক নয়। বরং অল্প যে কয়েকটা ঘন্টা আমাদের হাতে থাকে পানাহার এর জন্যে, সেই সময়টাকেই যেনো আমরা সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে পারি তাই একটি সুষ্ঠ, সুষম ও সঠিক পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার জন্যে নীচের কিছু বিষয় মাথায় রাখতে পারিঃ

  • আমরা সাধারণতঃ পেঁয়াজু, মরিচা, বেগুনী, সিঙ্গারা, চমুছা, পাকোড়া ইত্যাদি ডুবো তেলে ভাজা-পোঁড়া খাবার দিয়েই ইফতার করতে অভ্যস্ত। অথচ স্বাস্থ্যগত দিক থেকে সারাদিন রোজা রেখে খালি পেটে এই ধরণের খাবার আমাদের জন্যে যে কি পরিমান ক্ষতিকর তা উপলব্ধি করার জন্যে আমাদের ডাক্তার হওয়ার প্রয়োজন নেই। গ্যাষ্ট্রিক-আলসার এর সুবাদে মোটোমোটি সবারই কিছু না কিছু অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যেই অর্জিত হয়ে গেছে। খালি পেটে ভাজা-পোড়া না খেলে যে ইফতার করা হবে না, এমনটাও কিন্তু নয়। আমরা একটু সচেতনভাবে চেষ্টা করলেই এই ধারাটা পরিবর্তন করতে পারি। এর পরিবর্তে ফল-মূল, দই ও দই জাতীয় খাবার (যেমন লাসসি, বোরহানি, দই বড়া, ইত্যাদি), সিরিয়েল (cereal) জাতীয় খাবার (যেমন oatmeal, wholegrain খাবার বা রূটি ইত্যাদি) গ্রহন করতে পারি। অনেকেই অল্প কিছু খেজুর, পানীয়, ফল-মুল ইত্যাদি দিয়ে ইফতারি করে মাগরীব এর নামাজের পর পরই রাতের খাবার খেয়ে ফেলেন। ইন্দোনেশিয়া, মালেয়শিয়া সহ বিভিন্ন দেশে এভাবেই ইফতার করে থাকে। এতে ভরা পেটে মাগরীব এর নামায পড়তে যেমন কষ্ট হয় না, তেমনি মাগরীব এর নামাজটাও সময়মতোই পড়ে ফেলা যায়, অতিরিক্ত দেরীতে পড়া হয় না।

 

  • সারাদিন রোজা রেখে স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের চোখের খিদেটা বেড়ে যায়, মনে হয় যেনো অনেক কিছুই নিঃশেষ করে ফেলা যাবে নিমিষেই। তাই আমরা সারাদিন fasting শেষে feasting করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। প্রকৃতপক্ষে সারাদিন উপোষ থেকে অতিরিক্ত ভোজন আমাদের জন্যে মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। হাদীসেও এভাবে মহানবী (সঃ) বলেছেনঃ “কোনো মানুষ সবচেয়ে নিকৃষ্ট যে পাত্রটি পরিপূর্ণ করতে পারে, তা হলো পেট!” একই হাদীসে নবীজী (সঃ)সুন্দরভাবেই আমাদেরকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে আমরা পেট এর এক তৃতীয়াংশ খাবার এর জন্যে, এক তৃতীয়াংশ পানি এর জন্যে এবং এক তৃতীয়াংশ খালি রাখি। অতি ভোজনে কোনো দিক থেকেই কোনো কল্যাণ নেই। বরঞ্চ আমেরিকার প্রখ্যাত ডাক্তার ওয (Dr. Oz, যিনি টিভি তে জনপ্রিয় সাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠান The Oz Show পরিচালনা করেন) মনে করেন, আশি শতাংশ (৮০%) মানুষের রোগই খাদ্যের কারণে সৃষ্ট। আমরা কেউ সঠিক খাবার গ্রহণ করছি না, বা সঠিক সময়ে গ্রহণ করছিনা, কিংবা সঠিক পদ্ধতির খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলছি না। অপর একটি হাদীসে অল্প ও পরিমিত আহারকে উৎসাহিত করতে বর্ণনা করা হয়েছেঃ ‘যা একজনের জন্যে যথেষ্ট, তা দুই জনের জন্যেও যথেষ্ট; যা দুই জনের জন্যে যথেষ্ট, তা তিন জনের জন্যেও যথেষ্ট…’ আমাদের সামান্য সচেতনতার মাধ্যমেই আমরা ইফতারীতে ভুরিভোজন থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারি। এতে শরীর হাল্কা থাকায় তারাবীহ এর নামায পড়তেও সহজ হয়। পাশাপাশি গৃহিনীদের জন্যেও হরেক রকম ইফতারী আয়োজনের সময় ও শ্রম থেকে কিছুটা ইবাদাতে মনোনিবেশ করতে সুবিধা হয়। তাঁদের জন্যেও ইবাদাতের সুযোগ করে দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

 

  • সারাদিন রোজা রাখতে গিয়ে আমরা খুব সহজেই পানি স্বল্পতায় ভুগি। যেসব দেশে প্রচন্ড গরম আবহাওয়া, কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে রোজা রাখতে হয়, তাদেরও পানি স্বল্পতায় ভোগাটা স্বাভাবিক। আমাদের পক্ষে শরীরে উট এর মতো পানি সঞ্চয় করে রাখারও কোনো সুযোগ নেই। তাই একটু সচেতনতার সাথেই পানি স্বল্পতা রোধ এর ব্যাপারে আমরা কিছু কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে পারি। যেমন, গুরুপাক খাবার যেমন বিরানী, পোলাও, ডুবো তেলে ভাজা-পোড়া, কিংবা এমন খাবার যা শরীর থেকে পানি টেনে নেই (নান রূটি, ইত্যাদি) তা পরিহার করা উচিত। তার পরিবর্তে ফল-মূল, শাক-সবজি, মাছ, সালাদ, দই ইত্যাদি খাবার গ্রহন করা উচিৎ। আর তারাবীহ’র নামাযের সময় সাথে করে একটি পানির বোতল রাখা যায়, যা কিছুক্ষণ পর পর আপনাকে পানিতে সিক্ত করতে সহযোগিতা করবে। তুলসি দানা (তোকমার দানা নামেও অনেকের কাছে পরিচিত), বেলের শরবত, ডাব এর পানি, শষা, তরমুজ, দই/দুধ-কলা বা এই ধরণের উপকরণগুলো ইফতার ও সেহেরী সহ রাতে গ্রহন করা যায়, যা পানি স্বল্পতা দূর করতে সহযোগী।

 

  • নিজেরা যেমন গুনগত মানে ভাল ইফতার করতে আগ্রহী, ঠিক তেমনি সম্মিলিত ইফতার পার্টি গুলোতেও একই ভাবে স্বাস্থ্য সম্মত ইফতার সর্বরাহ করে নতুন একটি ধারা চালু করতে পারি। এতে হরেক রকম আইটেম দিয়ে ইফতার করার ঝামেলা যেমন কমবে, স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও সবাই সচেতনতা অর্জন করতে পারবেন।

 

রামাদানে কাজঃ

আমাদের পূর্ববর্তী যূগের মুসলিম মনীষীরা সাধারণত রামাদান মাসে কাজ থেকে বিরত থাকতেন, যাতে এই মাসের পুরোটাই ইবাদাতে নিয়োগ করতে পারেন। ইমাম মালিক (রহঃ) এর মতো সেই যূগের সর্বশ্রেষ্ঠ ফক্বীহ ও হাদীসবীদও তাঁর ‘ইলমী পাঠচক্র গুলো স্থগিত করে দিতেন। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর এই যূগে তো আমাদের পক্ষে শ্রোতের প্রতিকূলে গিয়ে আমাদের সকল কাজ কর্ম বন্ধ করে কেবলমাত্র ইবাদাতে একাগ্রচিত্তে মশগুল হয়ে থাকা সম্ভব নয়। বস্তবতার নিরিখেই আমাদেরকে পরিকল্পনা করে ইবাদাত ও কাজের মাঝে সমন্বয় সাধন করতে হবে। নীচে এরুপ কয়েকটা দিক তুলে ধরা হয়েছেঃ

 

  • সক্রিয় ও ফলপ্রদ সময়টি (active hour) বের করে নেওয়াঃ রোজা রেখে ক্লান্ত দেহে অনেক সময় দিনের সব কাজ অন্য দিনগুলুর মতো ফলপ্রসূ নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা দিনের যে সময়টাতে বেশী কর্মঠ ও বেশী সতেজ থাকি, সেই সময়েই আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলু সেরে নিতে পারি। অনেকের ক্ষেত্রে তা দিনের প্রথম ভাগে হতে পারে, আবার অনেকের ক্ষেত্রে তা অন্য সময়টাও হতে পারে। আপনি নিজেই নিজের সক্রিয় সময়টি বের করে নিয়ে কাজগুলূ সেরে ফেলতে পারেন।

 

  • হাল্কা বিশ্রাম বা পাওয়ার ন্যাপ নিয়েও নিজেকে সতেজ ও সক্রিয় করে তুলতে পারেন। রামাদান মাসে আমরা ‘লাঞ্চ-আওয়ার’ বা মধ্যাহ্নভোজের বিরতীকে হাল্কা বিশ্রাম বা পাওয়ার ন্যাপ এর জন্যে কাজে লাগাতে পারি। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের পাওয়ার ন্যাপ এ রয়েছে নতুন প্রাণশক্তি যোগানোর ক্ষমতা। পাওয়ার ন্যাপ এর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে তা যেনো ২০ মিনিটের উর্ধ্বে না হয়।

 

  • দিনের নানাবিধ ব্যস্ততার মাঝেও আমরা চাইলে কিছুটা সময় আলাদা করে হাল্কা কিছু ইবাদাত এর জন্যে কাজে লাগাতে পারি। যে সময়টা আমরা চা পান, বা নাশ্তার জন্যে ব্যয় করতাম, সেই সময়টাই যদি হাল্কা কিছু ইবাদাত, যেমন অযু করে দু’রাকাত দোহা এর নামায পড়ি, কিংবা ১০-১৫ মিনিট কুর’আন পাঠ বা অধ্যয়ন করি তাতে একদিকে যেমন আমাদের দেহ-মনের রিফ্রেশমেন্ট এর একটি ব্যবস্থা হয়, পাশাপাশি ব্যস্ত কাজের ফাঁকেও কিছু ইবাদাত এর সুযোগ তৈরী হয়ে যায়।

 

  • একটানা কাজ না করে অল্প কিছুক্ষণ পরে হাল্কা নড়াচড়া করলে শরীরের উপর চাপটা কম পড়ে। এতে শরীরে জড়তা তৈরী হয় না, তাই সারাদিন কাজ করলেও তেমন একটা কষ্ট অনুভুত হয় না। বিশেষ করে যারা বসে বসে কাজ করেন (যেমন ডেস্ক কেন্দ্রিক কাজ), তাদের জন্যে হাল্কা নড়াচড়া বা ব্যায়াম করার ব্যাপারে ডাক্তাররাও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। রামাদানেও ৩০-৪০ মিনিট কাজ করে হাল্কা ব্যায়াম করাটা ভাল। অবশ্য রোজা রেখে ভারী ব্যায়াম করা উচিৎ নয়।

 

  • সারা মাস অনেক কাজ থাকে, তাই আমাদের অনেকেরই আলাদা করে ই’তেকাফে বসার সুযোগ হয়ে উঠে না। কিন্তু আমরা চাইলেই আমাদের বার্ষিক ছুটি থেকেই কিছু দিন ছুটি নিয়ে আল্লাহ’র সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে ই’তেকাফে বসতে পারি। পুরো দশ দিন ছুটি নেওয়ার সুযোগ না থাকলে কেবলমাত্র বেজোড় রাতের পরবর্তি দিনগুলোও ছুটি নিতে পারি, যাতে রাত জেগে ক্বিয়ামুল্লাইল করা যায়। তাতে মাঝখানে সপ্তাহিক ছুটির দিন পড়লে পূরো পাঁচটা দিন ছুটি নিতে হচ্ছে না, কেবল দুয়েক দিন ছুটি নিলেই হচ্ছে। এভাবে আমরা ক্বিয়ামুল্লাইল ও ই’তেকাফের জন্যেও পরিকল্পনা রাখতে পারি।

 

রামাদানে পাঠ পরিকল্পনাঃ

রামাদান মাস যেমন কুর’আন নাযিলের মাস, তেমনি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির মাস। এই মাসেই দ্বীনের অনেক বিষয় সম্পর্কে আমাদের জানার ও মানার সুযোগ হয়ে উঠে। আমাদের সুষ্ঠ পরিকল্পনা থাকলে সেই জানার সুযোগটাকে আরো ফলপ্রসূ করে তোলা সম্ভব হবে। যেমনঃ

  • আমাদের প্রত্যেকেরই কুর’আন কেন্দ্রিক একটি পরিকল্পনা থাকা উচিৎ। আমাদের যারা কুর’আন শরীফ পড়তে কম পারি, তারা কুর’আন শিক্ষার ব্যাপারে একটি পরিকল্পনা রাখতে পারি। আর যারা কুর’আন পাঠে সাবলীল, আমরা কুর’আন খতম করার পরিকল্পনা রাখতে পারি। কেবল মাত্র তেলাওয়াতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে, আমরা সকলেই কুর’আন শরীফের কোনো একটি তাফসীর নিয়ে কুর’আন অধ্যয়নের পরিকল্পনা রাখতে পারি। ছোট হোক আর বড় হোক, একটি সূরা হোক বা অল্প কয়েকটি হোক, বাংলা ভাষায় হোক আর ইংরেজী, আরবীতে হোক, যে কোনো একটা তাফসীর অধ্যয়ন আমাদের পরিকল্পনায় রাখা উচিৎ। এতে কুর’আন নাযিলের মাসে কুর’আন শরীফের সাথে আরো সুদৃঢ় সম্পর্ক বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে, ইন শা আল্লাহ।

 

  • কুর’আন এর পাশাপাশি হাদীস কেন্দ্রিক একটি পরিকল্পনা থাকা যেতে পারে। কেউ হয়তো সহীহ বুখারী এর কেবলমাত্র কিতাবুস-সাউম (রোজার অধ্যায়) অধ্যয়নের জন্যে পরিকল্পনা করতে পারেন। কেউ হয়তো সহীহ মুসলিম থেকে নির্বাচন করতে পারেন, বা অন্য যে কোনো একটা হাদীস গ্রন্থের যে কোনো অধ্যায়ও হতে পারে। কেউ হয়তো মাত্র তিরিশটি হাদীস নির্ধারণ করে নিতে পারেন, যাতে দিনে একটি করে পড়তে পারেন।

 

  • কুর’আন হাদীসের পাশাপাশি আমাদের পাঠ পরিকল্পনায় সীরাহ (ইতিহাস), ফিক্বাহ (ইসলামী বিধি বিধান), বা ইসলাম সম্পর্কিত যে কোনো বিষয়ই থাকতে পারে। প্রিয় নবী (সঃ) এর জীবনী সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা উচিৎ। তাঁর সাহাবীরা (রাদিঃ) কিভাবে তাঁকে অনুসরণ করেছেন, কিভাবে তাঁরা মাত্র দুই দশকের ব্যবধানে বর্বরতার অন্ধকার চিরে পৃথিবীর বুকে সর্ব শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত হলেন, তা কি জানতে আমাদের মোটেও আগ্রহ জন্মে না? পাশাপাশি, আমরা প্রতিনিয়ত যে সকল ইবাদাত করছি, নামাজ-রোজার মতোই অন্যান্য ইবাদাতের ব্যাপারেও আমাদের সঠিক বিধি বিধানগুলু জেনে রাখা উচিৎ। এবং রামাদান মাসই হতে পারে এই জ্ঞানান্বেষণ এর প্রথম উদ্যোগ।

 

  • পাঠ পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এই ডিজিটাল জুগে আমরা চাইলে বই বা লেখা কেন্দ্রিক না হয়ে কিছুটা অডিও-ভিডিও মাধ্যম গুলোরও সাহায্য নিতে পারি। যেমন, তাফসীর এর ক্ষেত্রে ইয়ুটিউব এ অনেক তাফসীর পাওয়া যায়। আমরা সেগুলো ডাউনলোড করে রেখে অফিসে আসা যাওয়ার পথেই দেখে নিতে পারি। কিংবা অডিওগুলো শুনে নিতে পারি। একইভাবে হাদীস, ফিক্বাহ, সীরাহ সহ বিভিন্ন ইসলামী বিষয়ে অনেক আলোচনা ডিজিটাল জগতের সুবাদে এখন আমাদের হাতের মুঠোই পাওয়া যায়। তার মধ্যে নোমান আলী খান এর কুর’আন এর আলোচনা, কিংবা ইয়াসির কাদ্বী এর কুর’আন, সীরাহ সিরিজ সহ অনেক লেকচার উল্লেখযোগ্য। তা আমরা কাজে লাগাতে পারি।

 

  • পাঠ পরিকল্পনার জন্যে কেবল পরিকল্পনাতেই সীমাবদ্ধ না রেখে, তা বাস্তবায়নের উদ্দ্যেশ্যে পরিকল্পিত বই পত্র, বা ডিজিটাল উপকরণগুলো হাতের নাগালে রাখা অত্যাবশ্যক। এতে রামাদান এর শুরু থেকেই পরিকল্পনা মাফিক কাজে নেমে পড়া সম্ভব।

 

রামাদানে কেনা-কাটাঃ

রামাদান মাস ইবাদাতের মাস, তাই বলে কি দুনিয়াবী কোনো প্রয়োজন আমরা পূরণ করবো না? তা কিন্তু নয়। বরঞ্চ অনেক সময় ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের রামাদানে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশী কেনা-কাটা করতে হয়। আমরা অনেকেই নিজেদের জন্যে তেমন কিছু না কিনলেও অন্যদেরকে উপহার দিতে, বা সন্তান-সন্ততীদের জন্যেই অনেক কেনা-কাটা করে থাকি। এই বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করার কোনো সুযোগ নেই।

কিন্তু রামাদান মাসে বাজার করতে যাওয়া মানেই কষ্ট। একদিকে হুড়োহুড়ি-ঠেলাঠেলি, অন্যদিকে ক্লান্তি, আবার অন্যদিকে ইফতার, তারাবীহ-ইবাদাত, এ নিয়ে ব্যস্ততা। সব মিলিয়ে সামঞ্জস্য করাটা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। তাই, আমরা চাইলে ঈদের বেশ কিছু বাজার রামাদানের পূর্বেই সেরে ফেলতে পারি। এতে রামাদানে কেনা-কাটার ঝক্কি ঝামেলা থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়।

আর যেসব বাজার রামাদানেই কিনতে হবে, সে ক্ষেত্রে দিনের যে সময়টাতে ভিড় কম থাকে, বা আমাদের শরীর-মন ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার পূর্বেই বাজারের ঝামেলাটা সেরে ফেলতে পারি।

 

রামাদানে ব্যক্তিগত মান বৃদ্ধিঃ

আমরা প্রত্যেকেই মৃত্যুর পরে জান্নাত আশা করি। আমরা কেউই চাইনা দোযখের আগুনে একটি মুহুর্তও জ্বলতে। কিন্তু ‘মানুষ’ হিসেবেই আমাদের অনেক দূর্বলতা রয়েছে, এবং প্রতি নিয়তই ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক, অনেক ভুল-ত্রুটির মুখোমুখি হই। প্রতি বছরই রামাদান মাস আমাদের কাছে এসে কড়া নেড়ে জানতে চায়, কে আছে আমাদের মাঝে যে সারা বছরে আরো ভালো মুসলমান হতে ইচ্ছুক? কে আছে আল্লাহ’র আরো কাছে যেতে ইচ্ছুক? কে আছে, দ্বীনকে আরো ভালোভাবে বুঝতে ইচ্ছুক? রামাদান আমাদের জন্যে সেই সুযোগটিই নিয়ে আসে, যাতে আমরা এই মাসের শৃংখলিত নিয়মে আবিষ্ট হয়ে সারা বছর আরো ভালো মানুষ হয়ে থাকতে পারি। এর জন্যে আমাদের যেমন সচেতনতার প্রয়োজন, তেমনি সঠিক পরিকল্পনারও প্রয়োজন। আমরা যেসব দিক পরিকল্পনায় রাখতে পারি, তার মধ্যে রয়েছেঃ

  • সারা জীবনের জন্যে অন্তত একটি ভাল গুনকে গ্রহন করা, চর্চা করা, ও নিজের মধ্যে স্থায়িত্ব দেয়া। তা হতে পারে অন্যকে ক্ষমা করে দেওয়ার মতো গুন, কিংবা অপরকে সহযোগিতা করা, রাগ না করা, মিথ্যা না বলা, ঘৃণা না করা, কাউকেও অবজ্ঞা না করা, হিংশা না করা, নিয়মানুবর্তি হওয়া, দানশীলতা অর্জন করা, ইত্যাদি অনেক গুনের ন্যুনতম যে কোনো একটি গুন। এই রামাদানই হতে পারে আমার পরিবর্তনের প্রথম সূর্যোদয়।

 

  • আমাদের অনেকের বন্ধু বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এতোই দূরে দূরে আছেন, যে তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হয়ে উঠে না। এই রামাদান কে উপলক্ষ করে, রামাদান বার্তা, ঈদ বার্তা বা কেবল মাত্র আল্লাহ’র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেও তাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা যেতে পারে।

 

  • আমাদের প্রতিবেশী ও অমুসলিম বন্ধু বান্ধবদেরও যেনো আমরা ভুলে না যাই। এই রামাদানই হোক তাদের সাথে মিলে সাম্যের আর ঐক্যের ব্জ্রধ্বনী তোলার মাস।

 

  • ইদানিং কালে আমরা আমাদের ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপের প্রতি এতো বেশী ঝুঁকে থাকি যে আমাদের কাছের মানুষদেরকে পর্যাপ্ত সময় দেয়ারও খেয়াল থাকে না। রামাদান মাসে পানাহার থেকে রোজা রাখার পাশাপাশি, চলুন কিছুক্ষণ ফোন-ট্যাব-গেজেট গুলো থেকেও রোজা রাখা শুরু করি। এতে আমাদের সময় এর যেমন সাশ্রয় হবে, তেমনই চোখ ও মনের উপর বৈদ্যুতিক গেজেটের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে নিজেদের কে কিছুটা বিশ্রাম দেওয়া যাবে।

 

এখানে যা উল্লেখ করেছি, তার বাইরেও আরো অনেক পরিকল্পনা আপনারা ব্যক্তিগতভাবে নিতে পারেন। সর্বোপরি এই রামাদান মাসের বরকত যেনো আমরা সবাই অর্জন করতে পারি, তাই এই লেখার উদ্দেশ্য। কেউ উপকৃত হয়ে থাকলে দুয়া করবেন, তার চেয়ে উত্তম আর কোনো উপহার হতে পারে না। আল্লাহ’র কাছে এই দুয়াই করি, যেনো যা লেখেছি তা বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে আল্লাহ সহযোগিতা করেন। আমীন।





Adverse Effects of Interest (Riba)

8 10 2015

Interest is detrimental for an economy as well as the society in many forms. Interest based financing creates debt, and debt leads to instability in the economy. It also creates inequity in the distribution of income and wealth, leading to inefficient allocation of resources.[1] The frequently cited menace in the European debt crisis of “privatisation of profit and socialisation of loss” underscored the dangerous effects of debt to society and civilization. Debts, with the interest or profit to be paid over the capital borrowed, causes inflation. National development declines due to lesser expenditure from the government. Similarly there will be a sharp decrease in investment, as the wealth created is spent to pay out debts.[2] Higher cost of living due to inflation increases distress among the citizens, hampering their productivity and national growth.

References:

[1] M. Nejatullah Siddiqi, The Economics of Tawarruq: How its Mafasid Overwhelm the Masalih, available at: http://www.siddiqi.com/mns/Economics_of_Tawarruq.pdf.

[2] For a detailed discussion on the effects of debt, see Abdul Karim Abdullah, “Debt and Economic Activity,” Islam and Civilizational Renewal (ICR), vol. 4, (3), July 2013, 407-22.

 

Related article:

The Legacy of Debt: Interest Costs Poised to Surpass Defense and Nondefense Discretionary Spending

 

 

 





Environmental Care in Islam

11 06 2015

It is not at all surprising that Islam has stressed tremendous emphasis on environmental care, and most importantly commissioned human beings as responsible vicegerents (khalifa/khulafa, pl.) on earth. Thus, human beings shoulder the great responsibility of maintaining a healthy living environment and caring for the nature. Besides, the planet earth has been chosen by Allah as the most suitable abode for human beings to live. This is sufficient for us humans to acknowledge the invaluable bounty of Allah bestowed on us, and as a means of gratitude one cannot deny his part in caring for the environment.

The holy Qur’an has emphasised and reiterated the significance of maintaining the natural balance (mizan) of the environment in multiple verses. There are more than five hundred (500) verses in the Qur’an which urges for environmental care. Besides the first revelation being at the cave of Hira – a natural setting with a pure and rejuvenating air away from the busy city-dwellings – is itself a significant indication of the interconnectedness of human beings with nature as well as the holy Qur’an. There are many chapters in the Qur’an which are named after different elements of the environment and nature; such as ‘Dawn (al-Fajr),’ ‘Morning (al-Duha),’ ‘Sun (al-Shams),’ Moon (al-Qamar),’ ‘Ant (al-Naml),’ ‘Bee (al-Nahl),’ ‘Cattle (al-An’am),’ ‘Elephant (al-Fil),’ ‘Iron (al-Hadeed),’ ‘the City (al-Balad),’ ‘the Lightening (al-Ra’d),’ among many others.  The Prophet (pbuh) himself was a strong advocate of environmental care and a pioneer of Islamic ecological science, if we may address him as such.

Some of the major principles Qur’an and the holy Prophet (pbuh) laid down for environmental care and Islamic ecology could be the following (although not limited to):

1. Unicity of the nature: that the nature is a divine gift, a blessed creation of the Almighty God. And all the elements of the environment and the nature itself turn towards the One God, willingly or unwillingly! They all praise Him (tahmid), glorify Him (tasbih) and worship Him in manners we don’t know.

2. Stewardship of human beings (khilafah): human beings are entrusted with the responsibility (amanah) of environmental care. Each and everyone of us are responsible for taking care of the environment, thus inflicting harm or abusing it is a major breach of trust.

3. Natural balance and equilibrium (mizan): the nature has been created with a natural balance, the proportion of air and wind are just perfect for us to live in, likewise the other proportions among all other elements of the nature are placed in the most suitable and perfect equilibrium. Besides, animal kingdom is dependent on the other kingdoms for its sustenance and livelihood, likewise plant kingdom is dependent on other kingdoms, and equilibrium is perfectly set naturally.

4. No-Waste policy: Islam abhors waste and promotes moderation in all affairs. Once the Prophet pbuh rebuked his companion Sa’ad ibn Abi Waqqas for wasting water in his ablution. He asked if there is waste in rituals. The Prophet (pbuh) said: ‘Yes. Even if one is to live by a flowing river, he should not waste.’ Islam teaches proper waste management tools as well. The Prophet (pbuh) taught his companions how to discharge refuse, and where to and where not to, and how should the waste be managed. He himself practised ‘reuse’ policy, while he used to mend his shoes and patch his clothes without any complains.

5. Civilisational construct (i’mar al-ard): Islam urges the Muslims not only to maintain the balance, but rather to construct a healthy and ‘livable’ environment. Islamic teachings urges on forestation, plantation, creating greenery, managing proper water cycle, and what we know today as ‘sustainable development!’ Due rights were not only given to the human beings, but also to animals, environment and other stakeholders. Developing barren lands (ihya al-mawat) are encouraged in the Islamic teachings.

These are simple brief points on Islamic principles of ecology. For a deeper understanding of the subject matter, I am uploading few articles and books which could help you further.

Environmental Care in Islam: A Qur’anic perspective by Professor Hashim Kamali

Riayat-al Bi’ah-fi Shariatil-Islam (رعاية البيئة في شريعة الإسلام) by Yusuf al-Qaradawi

Ecology Sustainability and Future Generations, by Fazlun Khalid

Green Economy Document, by ISESCO (Conference of the Minister’s of Environment)





Surrogacy and Islam: Between Permissibility and Prohibition

20 05 2015

Image result for surrogacy

Surrogacy has been a much debated issue from the Shari‘ah perspective since the mid-1980s and is still being discussed. It is generally considered impermissible in Islam. This issue was first addressed at the seventh session of the Muslim World League’s Islamic Fiqh Council meeting in 1404 AH/1985 CE, wherein the following year, the Council permitted fertilisation of the zygote only among married couples but with certain conditions. The Council however retracted its earlier views on permitting surrogacy among co-wives of the same husband. Similarly, the Fiqh Council of the Organization of Islamic Conference (OIC) in 1986 concluded that surrogacy could be permissible only between married couples and under certain conditions. Despite a restrictive opinion from these two authoritative fiqh councils, some Muslim scholars have also argued in favour of surrogacy, which demands more discussion here.

[Click here for full text]





Fee Zilal al-Qur’an in Bangla has been uploaded!

5 02 2014

Dear Bhais!

We have just uploaded the “Fee Zilal al-Quran” (first part) in Bangla for you! Enjoy reading it!

Fi Zilalil Quran





2013 in review

5 02 2014

The WordPress.com stats helper monkeys prepared a 2013 annual report for this blog of your choice!

Here’s an excerpt:

A San Francisco cable car holds 60 people. This blog was viewed about 2,800 times in 2013. If it were a cable car, it would take about 47 trips to carry that many people.

Click here to see the complete report.





New books on Islamic Banking have been added to the list

26 03 2013

Islamic Banking section has now improved with new books to read! Here are some of the books added:

Your reading list in Islamic Banking can now be more attractive than before! Enjoy…!





2012 in review

26 02 2013

The WordPress.com stats helper monkeys prepared a 2012 annual report for this blog.

Here’s an excerpt:

600 people reached the top of Mt. Everest in 2012. This blog got about 3,200 views in 2012. If every person who reached the top of Mt. Everest viewed this blog, it would have taken 5 years to get that many views.

Click here to see the complete report.





New Year, new blessings for all!!

9 01 2012

Hello friends,

Assalamu ‘Alaikum…. (May peace be upon you all)

 

It’s been a long time there have been some updates in this site. Yes, we hope that the new year of 2012 will be a more active year for us, and many new interesting links will connect you all up with the world of ‘ilm (knowledge)!

 

In the meantime, a few links have been updated already here! Hope you will enjoy the site as you did earlier!!

 

Cheers! Enjoy reading…